পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানায় কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় মাদক সিন্ডিকেট ও জুয়ার আসর। লকডাউনের মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে মিলছে মাদক। নিজস্ব ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করে অর্ডার দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী চক্র। আর এ কাজে এলাকাভিত্তিক কিছু নারী পুরুষ, উঠতি তরুন-যুবকদের ব্যবহারের মাধ্যমে তারা ইয়াবার চালান আনা-নেওয়া করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
তবে পুলিশ প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে তৎপর থাকলেও থামানো যাচ্ছে না মাদক সিন্ডিকেটের হোতাদের।
গত ৩০ জুলাই স্বরূপকাঠিতে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ শিল্পী বেগম (৩৮) নামে এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবছরের ১২ জানুয়ারী ইয়াবা ও গাজাসহ দুই জন নারী-পুরুষকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় থানা পুলিশ। অনেকে আবার নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা পেয়ারা বাগান, ভাসমান হাট ,পর্যটকদের কাছ থেকে তরুণ-তরুণীদের জিম্মি করে আদায় করে মোটা অংকের টাকা।
জানা গেছে, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর বাজার সংলগ্ন এরশাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এবং বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিনিয়ত বসে রমরমা মাদকের হাট ও জুয়ার আসর। এখানে ঘুরতে আসা পর্যটক ও পেয়ারা ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ট্রলারযোগে আসা তরুন তরুনী পর্যটকদের খপ্পরে ফেলে তাদের কাছ থেকে আদায় করছে মোটা অংকের টাকা। এক শ্রেনীর বখাটে উঠতি তরুন বয়সী মাদক সেবনকারী প্রতিনিয়ত ওই স্পট থেকে ট্রলার প্রতি ১০০/২০০শ টাকা চাঁদা উত্তোলন করছে বলে পর্যাটক ও স্থানীয়রা জানান। টাকা না পেলে অনেকের আবার নাজেহাল হতে হয়।
এ নিয়ে এলাকায় সাধারন জনগণের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। চলমান লকডাউন উপেক্ষা করে ওই সব বখাটেরা মাদক দ্রব্য বিক্রি সহ নানা অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পরছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এলাকার বর্ষিয়ান কয়েকজন রাজনীতিবিদ এ প্রতিবেদককে জানান, এলাকার বিএনপি পন্থি কয়েকজন নেতাকর্মী স্বতন্ত্র থেকে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার এর কাঁধে ভর দিয়ে ওই এলাকার পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে গাঁজা সেবন করছে।
পর্যাটক শাহিন হাওলাদার বলেন, আমি এ ঘাট থেকে ট্রলার নেয়ার সাথে সাথেই কয়েক জন যুবক আমাদের বলেন, ঘাট ভাড়া ১০০শ টাকা দিতে হবে। আমি কোন কথা না বলে টাকা দিয়ে ট্রলারে উঠে ভ্রমন করি। এ ব্যাপারে (স্বরুপকাঠি) নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবির হোসেন জানান, বর্তমান সরকার ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মোতাবেক স্বরুপকাঠি নেছারাবাদ এলাকা মাদক জিরো ট্রলারেন্সে নিয়ে এসেছি। বর্তমানে মাদক কারবারি বা চাদাঁবাজ যে দলেরই হউক না কেন আইনের কাছে ছাড় পাবে না। মাদক কারবারি ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান ব্যাহত আছে এবং থাকবে।
আটঘর কুরিয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার জানান, তরুন প্রজন্ম ও শিক্ষক, সাংবদিকদের সাথে নিয়ে মাদক,সন্ত্রাস , সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে বর্তমান সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী আটঘর কুরিয়ানা ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন রুপান্তর করতে চাই। আপনার কাঁধে ভর দিয়ে রাতারাতি দলীয় ভোল পাল্টে প্রতিনিয়ত পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে গাঁজা সেবন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিপুল ভোটে জনগনের রায়ে নির্বাচিত হয়েছি। আমার নাম ব্যবহার করে কিংবা আমার কঁধে ভর দিয়ে কেউ যদি অপরাধমুলক কাজ করতে চায় তাদেরকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাা নেয়া হবে বলে এ প্রতিবেদক কে মুঠো ফোনে জানান।
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন মুঠোফোনে জানান, এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।