২০২৩ সাল বরণ করেছে বিশ্ববাসী। রাজধানী ঢাকায় বরাবরের মতো এবারও আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস ওড়ানো নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কে শোনে কার কথা? বরং গেল দুই বছরের চেয়েও আরো বেশি আয়োজন ছিল ইংরেজি বর্ষবরণ নিয়ে। রাত ১১ টার পর থেকেই দুই-চারটা পটকা ফুটিয়ে জানান দেয় রাজধানীবাসী আমরা প্রস্তুত। ১২টার বাজার পাচ মিনিটি আগেই থেকেই শুরু হয় মুহুরমুর শব্দে ফেটে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা। থেকে থেকে আতশবাজি, পটকা ও ফানুস উড়িয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় নগরবাসী।
ঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটা ১২টায় পৌঁছানোর আগেই আতশবাজির রঙিন আলোয় ভরে ওঠে আকাশ। চারপাশে শুরু হয় আনন্দ উল্লাসের ধ্বনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ২০২৩ সাল বর্নিলভাবে বরণ করে নেয়া হয়েছে।
ভৌগলিক কারণে বিশ্বের মধ্যে সবার আগে নতুন বছর বরণ করে নেয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র কিরিবাস, টোঙ্গা ও সামোয়া। পরে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সময় রাত ১২টায় নানা আয়োজনে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরটিকে।
অষ্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবারে নববর্ষ উদযাপন করতে জড়ো হন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। এই এলাকার হারবার ব্রিজের উপর থেকে ৭ হাজার আতশবাজি ফোটানো হয়েছে। এ ছাড়া কাছাকাছি অপেরা হাউস থেকে দুই হাজার বেশি আতশবাজিতে বর্ণিল হয়ে ওঠে রাতের আকাশ।
বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাপানে নববর্ষ উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণটি চলে আসে। রাজধানী টোকিওসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে আতশবাজির আলোর ঝলক দেখা গেছে। এ ছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে এসব শহরে মনোরম আলোকসজ্জারও ছবি প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
অর্থনৈতিক সংকটে থাকা যুক্তরাজ্যেও ব্যাপক আতশবাজি ফুটিয়ে নতুন ইংরেজি বছরকে বরণ করে নেয়া হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ‘হগমানয়’ উদযাপনের মধ্য দিয়ে লন্ডন, ম্যানচেস্টার, কার্ডিফ ও এডিনবরার বাসিন্দারা নতুব বছরকে স্বাগত জানায়।
তবে নতুন বছরে দেশবাসীকে সুখবর দিতে পারেননি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এক বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালেও কাটবে না যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক সংকট।
নতুন বছরের শুরুটা ভালো ছিল না ইউক্রেনীয়দের জন্য। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির অন্যান্য শহরে নববর্ষ বরণ করার আগমুহূর্তে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নববর্ষকে বরণ করতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশটিতে গত দুবছর ঘটা করে নতুন বছর উদযাপিত হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে ব্যাপক আয়োজনে বরণ করা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম ভবন বুর্জ খলিফায় ছিল চোখ ধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী।
চীনে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও নববর্ষ উদযাপনে দেশটির বাসিন্দাদের আগ্রহ-উদ্দীপনায় কোনো কমতি ছিল না। করোনার উৎপত্তিস্থল উহানের বাসিন্দারা বেলুন উড়িয়ে নববর্ষকে উদযাপন করে। এ ছাড়া বেইজিংয়ের গ্রেট ওয়ালেও ছিল নববর্ষের বিশেষ আয়োজন।
নতুন বছর উপলক্ষে দেয়া বার্তায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বলেন, ‘বিশ্ব শান্তিতে নেই, তবে শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে অটল অবস্থানে থাকবে বেইজিং।’