কেরানীগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলা

কেরানীগঞ্জ উপজেলার মডেল থানা এলাকার পূর্ব চড়াইল দারুস সালাম মাদ্রাসার রোডে মানব পাচার, মাদক বিক্রি ও অসামাজিক কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহকালে এশিয়ান টিভির কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় অপরাধীরা।

এ ঘটনায় বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আমলী আদালতে) ৪ জনকে আসামী ও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত নামায় ৪২৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৫০৬ ধারায় মামলা হয়েছে। মামলা নাম্বার – ৩৭৮/২০২১। আসামিরা হলেন – ১) মুক্তা আক্তার, ২) শহিদুল হাওলাদার ৩) রফিকুল ইসলাম, ৪) শুভ।

জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব চড়াইল এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নি‌য়ে মুক্তা নামের এই নারী দীর্ঘদিন যাবত মানবপাচার, মাদক বিক্রিসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চালি‌য়ে আস‌ছিল। সূত্র থেকে খবর পেয়ে এমন তথ্যের ভিত্তিতে, গত ০৬/০৫/২১ ইং তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা সাতটার দিকে তথ্যটি সঠিক কিনা অনুসন্ধান করতে স‌রেজ‌মিন যান এশিয়ান টেলিভিশনের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে মুক্তা আক্তারের নামে দীর্ঘ চার মাস আগে ০৯/০১/২১ ইং তারিখে ২৯০ ধারায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নন এফ আই আর প্রসিকিউশন মামলা হয়েছিল । অনুসন্ধানকালে এশিয়ান টেলিভিশনের ক্যামেরা দেখতে পেয়ে মুক্তা আক্তার নামের ওই নারী, এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ও ক্যামেরাপার্সনের উপরে হামলা করে কিল ঘুষি লাথি মেরে নীলা ফুলা জখম করে। ক্যামেরা ভাঙচুর, করে স্বামী শহিদুল হাওলাদার, বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম ও ছোট ছেলে শুভ হাওলাদসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ান টেলিভিশন এর প্রতিনিধি শেখ ফরিদ নিজেকে রক্ষার জন্য কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ কাজি মাইনুল ইসলামকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে মুক্তা আক্তার ও হামলাকারী সন্ত্রাসী বাহিনীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।  এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বিষয়টি মামলা না নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি নেয়া হয়। যার নামার – ৩৯৭। অসামাজিক কার্যকলাপকারী মুক্তা আক্তারের মিথ্যা অভিযোগটি কেরানীগঞ্জের সংশ্লিষ্ট দুটি থানা আমলে না নিলে তিনি পরবতিতে ১২/০৫/২০২১ তারিখ এশিয়ান টেলিভিশনের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ ফরিদের উপর চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগ এনে নিম্ন আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তবে যে বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি চাঁদা চাইছে এমন কোনো তথ্য বা প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কিছু সাংবাদিক ব্যত্তিগত আক্রোশে এশিয়ান টেলিভিশনের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধির নামে অপপ্রচার করেন।

এশিয়ান টেলিভিশন কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ ফরিদ জানায়, সত্য বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় কিছু সুবিধাভোগী সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে মুক্তা আক্তার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগ এনে বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক সংবাদ প্রচার করে । পরবর্তিতে কেরানীগঞ্জের দুইটি থানায় তারা মনগড়া কথা লিখে অভিযোগ দিলে অভিযোগটি সঠিক না হওয়ায় তা আমলে নেয়নি। তবে অভিযোগ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকাসহ বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক সংবাদ প্রকাশ করে, যা উদ্দেশ্য প্রনোদিত। আমি সেই মিথ্যা সংবাদ দেখতে পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নামার ৫৬৬ , তারিখ- ১২/০৫/২১।

শেখ ফরিদ জানায় আরও জানায়, অনুসন্ধানকালে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সংবাদ প্রকাশের ভয় ও প্রশাসনের ভয় ভিতি দেখিয়ে ঐ নারীর কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে এক‌টি অডিও রেকর্ড ইতিমধ্যেই প্রকা‌শিত হ‌য়ে‌ছে। যাতে শুনেছি, ডেইলি ট্রাইবুনাল নামে একটি ইংরেজি পত্রিকার পরিচয় দিয়ে জয়নাল আবেদিন মুক্তা আক্তার এর কাছ থেকে একাধিকবার চাঁদা নিয়েছেন। তবে সেই জয়নালের সা‌থে আমাকে জড়িয়ে যা বলা হয়েছে পুরোটাই মিথ্যা। এ জাতীয় ভিত্তিহীন খবরে আমি হতাশ। তাই আমি আইনের শরণাপন্ন হলাম। জয়নালের সাথে শুধুমাত্র নিউজের কারণে পথে-ঘাটে দেখা হত আর ফেসবুক কল্যানে সহকর্মীদের সঙ্গে কয়েকটি ছবি তোলা হয়েছিল মাত্র। কিস্তু সেভাবে কোন ঘনিষ্ঠতা নেই।

এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই মুক্তা আক্তার আগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হাউসিং এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা অপকর্মের ব্যবসা বাণিজ্য করতো। গোপন সংবাদের সূত্র অনুযায়ী গত চার মাস আগে আমরা নয়জনকে মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করেছি।