প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১০ শিক্ষার্থীকে বেধরক পিটিয়েছে বেক্রুজ-১ জাহাজের স্টাফরা।
সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে দমদমিয়া ঘাটে পৌছলে মঙ্গলবার বিকিলে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা সবাই চবির শিক্ষার্থী। প্রথমে মাঝ সাগরে পরে দমদমিয়া ঘাটে পৌছার পর আবারো হামলায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় সাহা জানান মঙ্গলবার সেন্টমার্টিন থেকে বেক্রুজে ফিরছিলেন চবির ৭৫ শিক্ষার্থী। মাঝপথে এসে নির্ধারিত আসন থেকে তুলে দেয় জাহাজের স্টাফরা। তুলে দেয়ার কারণ জানতে চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করে স্টাফ ও যাত্রীবেসে উঠা তাদের বন্ধুরা। এটা থামার পর যখন জাহাজ দমদমিয়া ঘাটে ভিড়ে তখন আরেক দফা মারধর শুরু করে তারা। এতে ১২ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে।
চবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ জন শিক্ষক শিক্ষার্থী সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যায়। কিন্তু পর্যটকবাহী জাহাজ বে ক্রুজ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় আমাদের শিক্ষার্থীদের সিট দিতে পারেনি। এ নিয়ে সাগরের মাঝ পথে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জাহাজ স্টাফদের কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাহাজের স্টাফরা বেশি উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর বেধড়ক মারধর করেছে।
প্রফেসর ফজলে রাব্বি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জাহাজ স্টাফদের কথা-কাটাকাটির শুরুতে বিষয়টি আমি জাহাজ মালিক বাহাদুর কে জানাই। তিনি স্টাফদের ঝগড়ায় না ঝড়াতে নিষেধ করতেছেন এবং টেকনাফ পৌঁছালে সমাধান করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু জাহাজ টেকনাফ দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছানোর পর তার স্টাফরা আরো বেশি আগ্রাসী হয়ে পড়েন। জাহাজ স্টাফদের আরেক দফা হামলায় শিক্ষক সহ বারোজন আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন ঘটনাস্থলে পৌছেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বেক্রুজের পরিচালক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর উল্টো তার স্টাফদের শিক্ষার্থীরা হামলা করেছে। তার দাবি আসনে বসা নিয়ে বাড়াবাড়ি থেকে তারা ঘটনা টা বড় করেছে। তার কোন স্টাফ হামলা করেনি।
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় দাবি করে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন ওইদিন সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। পর্যটকদের দাবি, এ ধরনের ঘটনায় সেন্টনার্টিনে পর্যটক ভ্রমণে বিরূপ প্রভাব পড়বে। জাহাজে পর্যটকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। সাধারণ পর্যটকদের মধ্যে ভয় ও আতংক কাজ করবে।