তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা দুই পাড়ের মানুষ

কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙনে দিশেহারা দুই পাড়ের লক্ষাধিক মানুষ। প্রায় গত এক মাস ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও সরকারি তেমন পদক্ষেপ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছে নদীর অববাহিকায় বসবাসকারীরা।

কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়েছে। চলতি বছর বর্ষার শুরু থেকেই উজানের ঢলে পানি সামান্য বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে ভয়াল মূর্তি ধারণ করেছে এই নদী। গত এক মাসের ভাঙনে তিস্তার অববাহিকার উলিপুর, রাজারহাট ও চিলমারী উপজেলার গড়াই পিয়ার, খেতাবখাঁ, গতিয়াসাম, বুড়িরহাট, কালিরহাট, ডাংরারহাট, কাশিমবাজারসহ অন্তত ৩০টি অংশে প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি ও আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা।

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গড়াই পিয়ার গ্রামে তিস্তাপাড়ের মজিদ মিয়া জানান, গত এক মাসে গড়াই পিয়ার এলাকার ৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২টি ওয়ার্ড তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ৮০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় মাঠ ও খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে।

চিলমারী উপজেলার কাশিমবাজার এলাকার সুজন মিয়া জানান, দ্রুত যদি এই তিস্তার ভাঙন বন্ধ করা না হয় তাহলে এই বর্ষা মৌসুমে আরও শতশত পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে।

বিভিন্ন স্থাপনাসহ তিস্তা পাড়ের মানুষের ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় স্থায়ী ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীদের।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার ভাঙন রোধে বিভিন্ন প্রকল্প চলমান থাকায় সেখানে ভাঙন কম থাকলেও তিস্তা নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা থাকায় এই মুহূর্তে তিস্তায় কোনো প্রকল্প চলমান নেই। তবে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ফেলানো হচ্ছে জিও ব্যাগ। তিস্তা নিয়ে প্রক্রিয়াধীন মেগা প্রকল্প অনুমোদন হলে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তখন তিস্তার পাড়ের মানুষ ভাঙন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে।