‘ধর্ম যার যার, তবে উৎসব সবার’

বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দিরে দিনভর নানা আয়োজন

মহামারি করোনাভাইরাসের বিরূপ বাস্তবতায় আজ সোমবার (৩০ আগস্ট) সারা দেশে উদযাপন হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি তথা শুভ জন্মাষ্টমী। করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এ বছরও অনেকটা ঘরোয়াভাবে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। কোনোরকম সমাবেশ, শোভাযাত্রা কিংবা ভক্তদের আমন্ত্রণ ছাড়াই মন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও রাজধানী সবুজবাগ থানার অর্ন্তভূক্ত রাজারবাগের শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মন্দির প্রাঙ্গণে।

কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটির সভাপতি লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস শুভ জন্মাষ্টমীতে দেশবাসীসহ এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, করোনার থাবায় বিশ্ব যখন হতাশায় জর্জরিত, তখনও বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে উন্নয়নের সোপানে। আজ রাজধানীবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেল এখন স্বপ্ন নয় বাস্তব। দেশের দীর্ঘতম পদ্মা ব্রিজও এখন দৃশ্যমান। কর্ণফুলিও শেষের পথে। এছাড়া সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হচ্ছে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু লালিত স্বপ্ন আর স্বপ্ন নয়। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। আমরা তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে মরিয়া। এ লক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও নিরলস কাজ করছে। ‘ধর্ম যার যার, তবে উৎসব সবার’- এটায় বাংলাদেশ বিশ্বাসী।

চিত্ত রঞ্জন দাস আরও বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এ দিনে এক যুগ-সন্ধিক্ষণে আবির্ভূত হিন্দুধর্মের প্রবর্তক ও মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংসের কারাগারে বন্দি দেবকী ও বাসুদেবের বেদনাহত ক্রোড়ে জন্ম নিয়েছিলেন। অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় সাধুজনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কংসের কারাগারে জন্ম নেন তিনি।

শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে শ্রীকৃষ্ণ ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। তবে বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে গেল বছরের মতো এবারও সীমিত পরিসরে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশেষ এ দিনটিতে উপবাস, পূজা-অর্চনা ও নামকীর্তনসহ বিভিন্ন আচার-উপাচার পালন করবেন। এছাড়া ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন হবে।

এ উপলক্ষে শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে সকালে মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ, মন্দিরে পূজা-অর্চনা, তারকব্রহ্ম হরিনাম সংকীর্তন ও তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞের আয়োজন করা। সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে ষোড়শ উপচারে পূজা শেষ করে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।