বড় দল নির্বাচনে না এলে ফলাফলে প্রভাব পড়বে : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বড় দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে নির্বাচনের ফলাফলে এর প্রভাব পড়বে।

বৃহস্পতিবার ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আমন্ত্রণে বিদেশি প্রতিনিধিরা আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন সিইসি।

সিইসি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বড় দুই দলের অনড় অবস্থান দেশের জন্য বিপজ্জনক। বড় কোনো দল জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে ফলাফল নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হবে। সবাইকে নির্বাচনে আনতে সরকারি দলকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে বলেও আশা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এই অবস্থানটুকু খুব বিপজ্জনক দেশের জন্য। যদি নির্বাচনে এ অনড় অবস্থার কারণে কোনো বড় দল অংশগ্রহণ না করে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বলব, নির্বাচনের মূল ফলাফলের ওপর এর একটা ঝুঁকি থাকতে পারে। আমরা চাই না ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। সে জন্য সরকারে অধিষ্ঠিত দলের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে আপনারাও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যান বিরোধীদলগুলোকে সঙ্গে নিতে। তারাও যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। পুরো জাতির কাছে নির্বাচনটি যেন গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশে এবং বিদেশে সেই স্বীকৃতি যেন লাভ করতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের লিমিটেশনটা বলতে চাই, আমরা সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন করব। বর্তমানে যেটা বহাল আছে। আমারা সেভাবেই নির্বাচন করব। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সকল রাজনৈতিক দল, প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো যেন অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা আশা করি, আগামী কয়েকমাসের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হয়ে সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমাদের বিভিন্ন দল থেকে বলা হয়েছে, তারাও বিশ্বাস করেন একটা সমঝোতা হবে। আমরাও আশাবাদী অবাধ, নিরপেক্ষ, উৎসবমুখর পরিবেশে ফলপ্রসূভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে এটা ছিল অনেকটা একাডেমিক ডিসকাশন। সেখানে তারা আমাদের পরামর্শ দেয়নি। আমরাও পরামর্শ দিইনি। গণতন্ত্রের যে চ্যালেঞ্জ সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে গরিব মানুষের পক্ষে অর্থ ব্যয় সম্ভব হয় না। এই অর্থ ব্যয়কে যদি সীমার মধ্যে আনা গেলে ভালো হতো। যদিও বিষয়টি অনেক কঠিন।

সিইসি আরও বলেন, আমরা যদি ট্রান্সপারেন্সি চাই তাহলে অবজারভার লাগবে। মিডিয়া লাগবে। মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকরা যদি সেখানে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে তাহলে স্বচ্ছতা অনেক বেশি নিশ্চিত হতে পারে। স্বচ্ছতার স্বার্থে নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষকদের জন্য একেবারে উন্মুক্ত। আমাদের আগামী নির্বাচন শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও যাতে নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানাল, মালয়েশিয়া থেকে ইউনাইটেড ন্যাশন ওয়ার্ল্ড পিস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেরিয়েট্টা এরগুইডো রেফরমাডো, জার্মান থেকে জিবিপি ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভলকার ইউ. ফ্রেডরিচ ,ভুটান থেকে গ্লোবাল ভিলেজ কানেকশনের চেয়ারম্যান জেকশন দুকপা, ভারত থেকে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস স্বপ্না সাহা।