বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ ছাড়ের ঘোষণা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত

সালাউদ্দিন চৌধুরী

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-19 এ যখন পুরো পৃথিবী দিশেহারা। একের পর এক দেশ জীবন বাঁচাতে যে যেভাবে পারছে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাদের অর্থনীতি সচল রাখতে। সেখানে উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকবে কেন? জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আজ সোনার বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নকে আজ বাস্তবে রুপ দিতে চলেছে। পর্যায়ক্রমে এক এক করে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। যেমন- খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে, ঘরে ঘরে আলো জ্বলছে, গৃহহীন মানুষ আজ ঘর পাচ্ছে, কর্মহীন মানুষ পাচ্ছে তার কাংখিত কর্ম, শিল্প বাঁচাতে নিচ্ছে নয়া নয়া উদ্যোগ। যার মধ্যে অন্যতম যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি।

আমরা জানি ইতিমধ্যেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যান চলছে। যা কিনা পুরো দক্ষিণাঞাচলের অর্থনীতিকেই নয়; বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। এমন বাস্তবতায় সরকার তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে আমি আনন্দিত ও প্রফুল্ল। কারণ আমি জানি ব্যবসা কি এবং এটা কীভাবে টিকে থাকে। একজন ব্যবসায়ীর কাছে তার প্রতিষ্ঠান সন্তানের চেয়েও বেশি। তার এ ব্যবসায় ভর করে চলে হাজার. লাখো পরিবার। তাদের সন্তানদের মানুষ হওয়ার স্বপ্ন বুনন। তাদের রুটি-রুজির যায়গাটা তাই মসজিদ-মন্দিরের চেয়ে কম নয়। তাই সেটাকে বাঁচাতে যখন দেশের সরকার ও কেন্দ্রিয় ব্যাংক কোন ভাল পদক্ষেপ নেন, তখন তাতে বাহবা না দিয়ে আমরা কি পারি? নিশ্চয় না, সুতরাং আমিও তাই বেজায় খুশি। বলছি-সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ ছাড়ের ঘোষণার কথা। এটি আসলেই এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত । আমি মনেকরি, উচ্চ সুদহার ও জটিল ঋণ পদ্ধতিই আমাদের দেশের খেলাপি ঋণ ও বিনিয়োগ কম হওয়ার মূল কারণ। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ ছাড়ের নীতিকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি, কারণ এখন অর্থনীতি ও ব্যবসা বাঁচাতে হবে দেশের সবার স্বার্থে।যদিও সম্মানিত অর্থনীতিবিদরা এর সমালোচনা করবে। করতেই পারে।উনাদের চেক এন্ড ব্যালেন্স দরকার আছে,।কিন্ত বাস্তবিক অর্থে সবসময় এতো ক্যালকুলেশন করলে দুনিয়া চলেনা,বিশেষ করে এই কঠিন সময়ে,এখন সময় টিকে থাকার।তবে অবশ্যই ঋণের অপব্যবহারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্হা করতে হবে এবং সকল সুযোগ বাদ দিতে হবে যা কিছুটা নতুন নীতিমালায়ও বলা আছে।করোনায় ব্যাকগুলো ছাড় দিয়ে প্রতিষ্ঠান টিকেছে,মানুষের চাকুরী বেঁচেছে,দেশের অর্থনীতি টিকেছে,ব্যাংকগুলোও টিকেছে।সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্ণর মহোদয়ের কথাতেও আমরা খুশি-দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্হানের স্বার্থে ব্যাংকের সুদহার আরও কমানো হবে। পুরো বিশ্বই ২য় বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে গভীর সংকটে পরেছিল। এখনও সে রকমই সময় আমরা পৃথিবীর মানুষ অতিক্রম করছি। এ সময় চাই একে অন্যের সহযোগীতা। আমার সরকার সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপই নিয়েছেন, এটা আমার বিশ্বাস। এতে করে দেশ বাঁচবে, দেশের মানুষ বাঁচবে। সর্বোপরি দেশের মানুষের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে। যদি মানুষই না বাঁচে তাহলে কিসের শিল্প, কিসের দেশ? প্রতিষ্ঠান যদি বন্ধ হয়ে যায় মানুষের কর্মসংস্হান ,রাজস্ব ও অর্থনীতিতে ধস নামবে,সামগ্রিক ঋণই খেলাপী হয়ে যাবে।আর প্রতিষ্ঠান টিকলে কিছুটা সময় বেশী গেলেও সব কাভার হয়ে যাবে একসময়। তাছাড়া, নিজ ব্যাংক জানে তার গ্রাহকের প্রকৃত অবস্হা,কেন্দ্রীয় ব্যাংক নয়।নতুন নীতিমালায় তা পরিষ্কার করা হয়েছে এবং ব্যাকগুলোকেও তা ঠিক করার সুযোগ দেয়া হয়েছে যা খুবই সময়পোযোগী। পরিশেষে, বলতে চাই, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও শক্ত এবং ইনশাল্লাহ এই সহায়তায় সবাই এগিয়ে যাবে অতীতের মতো।বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ । -সালাউদ্দিন চৌধুরী,রপ্তানিকারক ও শিল্পোদ্যোক্তা।