মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন,মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত বিকশিত না হলে আমাদের বিদেশনির্ভর থাকতে হতো। মাছ আমদানি করতে হতো। কোরবানির চাহিদা মেটাতে ভারত-মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি করতে হতো। এখন আমরা বিদেশমুখী নই।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সাভারে বিসিএস লাইভস্টক একাডেমি মিলনায়তনে ৪০তম বিসিএস (লাইভস্টক) ও বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডারে নবযোগদানকৃত কর্মকর্তাদের ৫ দিনব্যাপী অবহিতকরণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম খাবারের বড় একটি অংশ। এগুলো উৎপাদন না হলে দেশে খাদ্য সংকট হতো। পুষ্টি ও আমিষের যোগানে সংকট তৈরি হতো। সম্প্রতি যে তিনটি দেশ মৎস্য উৎপাদনে ভালো করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। প্রাণিসম্পদ খাতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন পৃথিবীর ৫০টির অধিক দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। কোন কোন দেশে মাংস রপ্তানি শুরু হচ্ছে। এ খাতে দেশে আন্তর্জাতিক মানের মাননিয়ন্ত্রণ পরীক্ষার ও গবেষণাগার তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রামীণ অর্থনীতির সচল রাখছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাত বেকারত্ব দূর করছে। উদ্যোক্তা তৈরি করছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করছে। নবনিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। সে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে হবে।
প্রধান অতিথি আরও যোগ করেন, দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত অন্যতম অংশীদার। এ খাতকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হচ্ছে। সেই ব্যবস্থার ক্যাপ্টেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার কারিগর।
নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারপরও একটি শ্রেণি আছে যারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চায়, সাম্প্রদায়িকতা ফিরিয়ে আনতে চায়। সেসব মানুষের দ্বারা কখনও বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার দৃপ্ত প্রত্যয় যারা ব্যহত করতে চায়, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও এ টি এম মোস্তফা কামাল, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বিসিএস লাইভস্টক একাডেমির পরিচালক ডা. পীযূষ কান্তি ঘোষ। ৪০তম বিসিএসে নবযোগদানকৃত লাইভস্টক ক্যাডারের ১৫২ জন এবং মৎস্য ক্যাডারের নবযোগদানকৃত ২৩ জন কর্মকর্তা অবহিতকরণ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে নবীন কর্মকর্তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ।