রোজিনার জামিনের অপেক্ষায় সাংবাদিকরা , কারাফটকে নিরাপত্তা জোরদার

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। আজ বৃহস্পতিবার রোজিনা ইসলামের জামিন হবে এবং তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হবেন—এমন প্রত্যাশায় সকাল থেকেই কারাফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।

এ অবস্থায় কারাফটকে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

সকাল থেকে গাজীপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা কারাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। ঢাকা থেকে বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকেরাও কারাফটকে আসছেন।

অপেক্ষারত গণমাধ্যমকর্মীদের আলোচনার প্রায় পুরোটাজুড়েই থাকছে রোজিনা ইসলাম প্রসঙ্গ। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার বিষয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। রোজিনা ইসলামকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাকে গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেত বলে তাঁরা মনে করছেন।

কারাগারের সামনে উপস্থিত ছিলেন ৭১ টিভির স্টাফ রিপোর্টার ইশতিয়াক ইমন। তিনি বলেন, শুরু থেকে এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই। রোজিনা ইসলামকে আটক করা মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপরে নগ্ন হস্তক্ষেপ। তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে

সময় টেলিভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি রাজীবুল হাসান বলেন, রোজিনা ইসলামের মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিকের জন্য কারাগারের সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে, এটি লজ্জাজনক। তাঁকে হেনস্তা ও জেল-জুলুম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রোজিনা ইসলামের মামলা প্রত্যাহার ও তাঁকে হেনস্তাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবেন মাঠের সাংবাদিকেরা।

রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চ্যুয়ালি শুনানি শেষ হয়েছে। তবে আদেশ হয়নি। সেই আদেশের অপেক্ষায় আছেন সাংবাদিকসহ দেশবাসী।

রোজিনা ইসলাম গত সোমবার দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর রোজিনাকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধিতে মামলা করা হয়।

পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে। একই সঙ্গে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে, রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবীরা।

ওই দিন শুনানি নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন। সেদিন আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।