ঈদ সামনে রেখে শিমুলিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঘরমুখী মানুষের ঢল নেমেছে। আজ শুক্রবার (৭ মে) সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যক্তিগত ও ভাড়া করা যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘাট এলাকায় জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
ফেরিতে হুমড়ি খেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় বিঘ্নিত হচ্ছে গাড়ি পারাপার। শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৮০০ যানবাহন।
করোনায় সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লকডাউনে লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে উঠছে। এতে ফেরিতে অত্যধিক চাপ পড়েছে। অধিক যাত্রীর চাপে ফেরিতে বিঘ্নিত হচ্ছে গাড়ি পারাপার। এসব যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি সচল রয়েছে।
মাওয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের টিআই হিলাল উদ্দিন জানান, শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় প্রায় ৮০০ গাড়ি রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই ব্যক্তিগত গাড়ি। এর মধ্যে প্রাইভেট কারের সংখ্যাই বেশি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ বলেন, সামনে ঈদ ও আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ঘাটে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখী মানুষ আসছে। লঞ্চ-স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরিতে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপে গাড়ি পারাপার করতে অসুবিধা হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার (৭ মে) সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
এসময় পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিইয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে ব্যক্তিগত ও ভাড়ায় চালিত ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল ও যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকের মুখে দেখা যায়নি কোনো মাস্ক।
জেলার অভ্যন্তরে গণপরিহন চলাচল শুরু হলেও ভোগান্তি এড়াতে দূর-দূরান্তের যাত্রীরা দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মাহেন্দ্রা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন বাহনে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এছাড়া দিনের বেলায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছয়টি ছোট ফেরি চলাচলের কথা কর্তৃপক্ষ বললেও শুক্রবার নদীতে ফেরি চলছে ১০টির বেশি।
ঘরমুখো যাত্রী আসমা খাতুন, রিপন মোল্লা, নাঈম খানসহ অনেকে জানান, ঝুঁকি আছে জেনেও তারা প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছেন। কিন্তু পথে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাসে উঠে জেলার শেষ সীমানায় নামতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। তারা আরও বলেন, অনেকে ব্যক্তিগতভাবে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছে। সেখানে প্রতিটি সিটে বহন করা হচ্ছে যাত্রী। বরং দূরপাল্লার বাস চলাচল করলে যেমন ভোগান্তি কমতো, তেমনি স্বাস্থ্যবিধিও অনেকটা নিশ্চিত হতো বলে মনে করেন তারা।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট সহকারী ব্যবস্থাপক মো. খোরশেদ আলম বলেন, এ রুটে ছয়টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আজ ছোট যানবাহন ও ঘুরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বাড়লে ফেরির সংখ্যাও বাড়বে। এজন্য রুটের ১৬টি ফেরির সবগুলোই প্রস্তুত রাখা হয়েছে।